কে না চায় টাইম ট্রাভেল করতে ? টাইম ট্রাভেল করে অতীত এর কোনো ভুল শুধরে দিতে। টাইম ট্রাভেল করে নিজের ভবিষ্যৎ দেখতে। এই আলোচনায় আমরা জানবো জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ কী সত্যিই টাইম ট্রাভেল করতে সক্ষম কিনা ?
টাইম ট্রাভেল নিয়ে হলিউড, বলিউড এবং সাম্প্রতিক দক্ষিণ ভারতীয় অনেক সিনেমা আমরা দেখেছি। কতটা সত্য টাইম ট্রাভেল ? আদৌ কী সত্য নাকি আলাদিনের প্রদীপের মতো রূপকথা !
হাবল টেলিস্কোপ ব্রহ্মান্ডের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে আমাদের সাহায্য করেছে। হাবল টেলিস্কোপ এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খোঁজ নীহারিকা (বাইরের মহাকাশে একটি মেঘাচ্ছন্ন অংশ যা গ্যাস এবং ধূলিকণা নিয়ে গঠিত, এর English প্রতিশব্দ “নেবুলা” শব্দটি অবশ্যই শুনে থাকবেন। ) । 2020 সালের এপ্রিলে এই টেলিস্কোপটি 30 বছর পূর্ণ করে । হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরি হল জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST), যা 25শে ডিসেম্বর, 2021-এ Guiana (France) থেকে মহাকাশে নিক্ষেপ করা হয়েছে।
JWST সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য :
- JWST নাসা , ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সী (ESA) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (CSA) এর একটি যৌথ উদ্যোগ।
- এটি নিক্ষেপের প্রায় 29.5 দিনে নিজের কক্ষ ( 2nd Lagrange Point, L2 ) তে পৌঁছাবে।( সব ঠিক থাকলে 23শে জানুয়ারী মধ্যরাতে এটি নিজ কক্ষে পৌঁছাবে)।
- এটি একটি বড় ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ। এর প্রাথমিক আয়নার দৈর্ঘ্য প্রায় 6.5 মিটার ।
- এর আয়না সোনার প্রলেপ করা। সোনার প্রলেপ -এ মোট 48.25g সোনার ব্যবহার করা হয়েছে।
- উচ্চ প্রতিফলন ক্ষমতা এবং অপ্রতিক্রিয়াশীলতার জন্য এই সোনার প্রলেপন। সোনা 90% ইনফ্রারেড রশ্মি প্রতিফলন করতে সক্ষম।
- টেলিস্কোপটি এতই বড়ো যে একে একবারে মহাকাশে নিক্ষেপ করা সম্ভব না। তাই ১৬টি ষড়ভুজাকৃতি ছোট আয়নার মাধ্যমে এটি তৈরী হবে। নিক্ষেপ কালে আয়নাগুলি গুটানো থাকবে । নিক্ষেপের পর মহাকাশে এই ছোট ছোট আয়না গুলি কে জুড়ে দিয়ে প্রাথমিক আয়নাটি গঠন করা হবে।
- ওয়েব পূর্বে “নেক্সট জেনারেশন স্পেস টেলিস্কোপ” (এনজিএসটি) নামে পরিচিত ছিল এবং এটি 2002 সালে নাসার প্রাক্তন প্রশাসক জেমস ওয়েবের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় । James Edwin Webb 1961 থেকে 1968 পর্যন্ত নাসার প্রশাসক ছিলেন।
- এটি ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) এর আজ পর্যন্ত তৈরী করা সবচেয়ে শক্তিশালী ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ।
JWST কি টাইম মেশিন ?
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ একটি ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ (মানব চক্ষু এই ইনফ্রারেড রশ্মি খালি চোখে দেখতে পায়না ) । বাড়িতে যে রিমোট ব্যবহার করি তাও এই ইনফ্রারেড রশ্মির মাধ্যমে কাজ করে।
তাত্ত্বিকভাবে আপনি যদি ৬৫মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের কোনো গ্রহ থেকে পৃথিবী কে দেখতে সক্ষম হন তাহলে আপনি এখন Dinosaurs দের রাজত্ব দেখতে পারবেন।
কিভাবে টাইম ট্রাভেল সম্ভব ?
আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তা হলো 1 আলোকবর্ষ। আপনি এখন যেভাবে আছেন আপনাকে 1 আলোকবর্ষ দূরের কোনো ব্যক্তি 1 বছর পরে সেই অবস্থায় দেখতে পাবে। তাই যদি কোনো টেলিস্কোপ এর সাহায্যে যদি আমরা 1 আলোকবর্ষ দূরে দেখতে সক্ষম হই তাহলে আমরা 1 বছর আগের সেই স্থানের ছবি দেখতে পারবো। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ 1 আলোকবর্ষ দূরে দেখতে সক্ষম।
লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরের কোনো নক্ষত্র থেকে কয়েক লক্ষ বছর আগের কোনো রশ্মি যদি এই টেলিস্কোপে ধরা পরে তাহলে আমরা সেই নক্ষত্রের অতীতের বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানতে পারবো। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে এটি মহাবিশ্বের প্রথম নক্ষত্র থেকে আসা আলো শনাক্ত করতে পারবে ।
তাহলে কী বলা যায় যে টাইম ট্রাভেল সম্ভব ?
1990s এর দশকে আপনি যদি কোনো মানুষকে বলতেন যে আমরা 2020 তে বাড়িতে বসে পৃথিবীর যেকোনো জায়গার মানুষকে,পকেটে পুরে রাখা যায় এমন কোনো এক বস্তুর মাধ্যমে সরাসরি দেখতে পাবো তাহলে তিনি হয়তো অসম্ভব ভাবতেন বা আপনাকে পাগল বলতেন। সেভাবেই টাইম ট্রাভেলও হয়তো একদিন সম্ভব হবে ।
Answer_ c)9.461 × 10¹² km
👍👍