কন্ডোম, কি শব্দটা শুনেই মুচকি হাসি পেলো তো? যেটা দোকানে কিনতে গেলে আমরা এখনো দোকান ফাঁকা হওয়ার অপেক্ষা করি। কিন্তু জানেন কি এই কন্ডোমের পিছনের ইতিহাস ? না জানলে আসুন জেনে নেওয়া যাক।
এই কন্ডোম জিনিসটা না থাকলে ব্যার্থ কন্ট্রোল ব্যাপারটা পুরো ঘেঁটে যেত। হ্যাঁ জানি আরো অনেক প্রটেকশন রয়েছে কিন্তু সেসব সহজলভ্য নয়। যেখানে কন্ডোম 25 টাকায় 3 টে পাওয়া যায়। আর এছাড়াও এখন সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলিতে বিনে পয়সায় পাওয়া যায়। শুধু আপনাকে গিয়ে চুপ করে পকেটে ঢুকিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
কন্ডোম নিয়ে ট্যাবু দূর করা এবং তার ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে প্রচার চালানো হচ্ছে বহু দিন ধরেই। প্রাচীন সময় থেকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ এবং যৌনরোগ থেকে বাঁচতে এর ব্যবহার হয়ে আসছে কন্ডোম। আজ থেকে 200 বছর আগে কী দিয়ে তৈরি হতো কন্ডোম, শুনলে পিলে চমকে উঠবে আবার অস্বস্থিও হতে পারে। ফ্রান্সের প্রাচীন গুহাচিত্রে কন্ডোম ব্যবহারের প্রথম নিদর্শন রয়েছে। তবে তা আধুনিক কন্ডোমের চেয়ে ছিল অনেকটাই আলাদা। কখনো পশুর শিং, পশুর চামড়া, খাদ্যনালি আবার কখনো ধাতব আস্তরণ। বুঝতেই পারছেন কতটা যন্ত্রনা দায়ক ছিল তখনকার সময় সেক্স করা।
চোদ্দশ বা পঞ্চদশ শতকে গ্ল্যানস কন্ডোমের ব্যবহার শুরু হয়। এই কন্ডোম শুধু লিঙ্গের উপরিভাগে পরা যেত। সাধারণত উচ্চ শ্রেণির মানুষদের মধ্যেই জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য এর প্রচলন ছিল।
ষষ্ঠদশ শতকে ইউরোপজুড়ে যৌন রোগ সিফিলিস ছড়িয়ে পড়ায় ইতালির চিকিৎসক গ্যাব্রিয়েলি ফ্যালোপিয়ো (তার নামানুসারে স্ত্রী যৌনাঙ্গ ফ্যালোপিয়ান টিউবের নামকরণ) একটি বিশেষ রাসায়নিকে সিক্ত করা লিনেন আবরণ বানান লিঙ্গের জন্য, যা সঙ্গমের সময় লিঙ্গে জড়িয়ে ফিতে দিয়ে বেঁধে দেওয়া হতো। যাতে কাজের সময় চরম মুহূর্তে খুলে না যায়।

এরপর ১৮৫৫ সাল থেকে রাবার কন্ডোম বহুল তৈরি ও ব্যবহার শুরু হয়। তবে সে সময় এর দাম বেশি হওয়ায় সমাজের ধনীরাই তা ব্যবহার করতেন। কিন্তু সেসময় রাবার অত্যাধিক মোটা এবং লুব্রিকেন্টের ব্যাবহার না থাকায় মহিলাদের পেনিট্রেশনের সময় অনেক কষ্ট হতো। ব্যাপারটা কত পেইনফুল নিশ্চই বুঝতেই পারছেন।
১৯১২ সালে ল্যাটেক্স আবিষ্কারের পরই অনেকটা বদল আসে কন্ডোমে। ল্যাটেক্সে উৎপাদনের খরচ কম হওয়ায় মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়ে যায় কন্ডোম। ১৯৫৭ সালে কন্ডোমের মান আরও উন্নত হয়। এই সময়ে ডিউরেক্স প্রথম লুব্রিকেন্ট কন্ডোম বাজারের নিয়ে আসে।
ফুঁটো কন্ডোম যেনো আপনার জীবনের সবচেয়ে আনন্দদায়ক মুহূর্তকে বিগড়ে দিতে পারে তাই ১৯৩৭ সাল থেকে প্রতিটা কন্ডোম প্যাক হওয়ার আগে চেক করা হতো। ১৯৮০ সালে দুনিয়াজুড়ে এইডসের প্রাদুর্ভাব হলে কন্ডোমের ব্যবহার আরও বেড়ে যায়।
ও আর একটা জিনিস, কন্ডোম থাকলে নাকি অলিম্পিকে পদকও পাওয়া যায়। নিয়ম অনুযায়ী অলিম্পিক্স ভিলেজে ঢোকার সময় প্রতিযোগীদের কন্ডোম দেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়ার ক্যানোইস্ট জেসিকা ফক্স সেই কন্ডোম ব্যবহার করেন তাঁর নৌকার ফুঁটো বন্ধ করার জন্য। আর এরপরই জিতে নেন মেডেল।
সত্যি অসাধারণ এক জিনিস। তাই না ?